ধর্ষণের রাজধানী দিল্লি / ধর্ষণের শহর দিল্লি!
অতিরিক্ত বারাবারির ফল সর্ব্দাই অতি জঘন্য হয়, এরি একটি প্রমাণ ( ধর্ষণের শহর দিল্লি!/ধর্ষণের রাজধানী দিল্লি ) । তাই আসুন আমাদের প্রতিবেশিরা যে ভুল করেছে তা থেকে শিক্ষা নিই এবং নিজ সংস্ক্রিতি নিয়ে থাকি।
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে ধর্ষণ বেড়ে গেছে। এ বছর এরই মধ্যে ৪৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এজন্য নয়া দিল্লিকে ধর্ষণের রাজধানী বলেও অভিহিত করছেন অনেকে। এ নিয়ে গত ১৬ই এপ্রিল অনলাইনগালফ নিউজে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, গত সপ্তাহে দক্ষিণ দিল্লিতে ফের ১৮ বছরের এক যুবতী ধর্ষিত হয়েছেন। প্রথমবার তার ভাইয়ের শ্বশুর তাকে ধর্ষণ করে। পরে এক ট্যাক্সিচালক তার দুই সঙ্গীকে নিয়ে ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে। এর ফলে দিল্লি তার ধর্ষণের রাজধানী খেতাব ধরে রাখলো বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, সর্বশেষ যে যুবতী ধর্ষিত হন তাকে তার ভাইয়ের শ্বশুর হনুমান মিশ্র বাড়িতে ডেকে নেন। সেখানে গেলে একপর্যায়ে হনুমানকে মদ্যপ অবস্থায় দেখতে পান ওই যুবতী। সে শক্তি প্রয়োগ করে ধর্ষণ করে নিজের মেয়ের মতো ওই যুবতীকে। সেখান থেকে কোনমতে পালিয়ে ওই যুবতী একটি ট্যাক্সিচালকের সাহায্য চান। সুযোগ বুঝে ওই ট্যাক্সিচালক তাকে নিয়ে যায় একটি নির্জন স্থানে। সেখানে অন্য দুই সহযোগীকে নিয়ে তারা ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে। এ ঘটনায় দিল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কিন্তু আগের মতো এখন আর এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামেনি বিক্ষোভ মিছিল। এর হয়তো কারণ একটাই। তা হলো- নিত্যদিনের এ ঘটনা দিল্লির মানুষের গা সওয়া হয়ে পড়েছে। এ বছরের শুরুর দিকে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত তিন ধর্ষকের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় দিয়েছে। এতে ধর্ষিতার সঙ্গে আপস মীমাংসার কথা বলা হয়েছে। ধর্ষিতাকে প্রতিজন ধর্ষক ৫০ হাজার করে রুপি জরিমানা দিতে বলা হয়। এতে নারী নেত্রী ও আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দেয়া রায়কে বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মারকানদেয়া কাতজু ও বিচারপতি জ্ঞান সুধা মিশ্রের আদালত। তারা দেখেন অভিযুক্তরা এরই মধ্যে ১০ বছরের সাড়ে তিন বছর জেল খেটেছে। তাই তাদেরকে আদালত মুক্ত করে দেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিনিয়র আইনজীবী কামিনি জইসাল। তিনি বলেছেন, কেউ একজন নারীর হারানো মর্যাদা টাকা দিয়ে কিনে দিতে পারেন না। আমি সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ে মর্মাহত। পিংকি শর্মা নামে আরেক আইনজীবী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ শাস্তির একটি অংশ মাত্র। কিন্তু তা শাস্তির বিকল্প নয়। মানুষ যদি এভাবে পার পেয়ে যায় তাহলে আইন থেকে লাভ কোথায়। দিল্লিতে নারীদের ওপর সমপ্রতি একটি জরিপ চালিয়েছে নারী অধিকার বিষয়ক গ্রুপ জাগরি ও জাতিসংঘের নারী বিষয়ক উন্নয়ন তহবিল। তাতে দেখা গেছে, গত এক বছরে দিল্লিতে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দু’জন কমপক্ষে দু’বার থেকে ৫ বার যৌন হয়রানির মুখে পড়েছেন। এতে দেখা গেছে, যখন এসব অপরাধ সংঘটিত হয় তখন শতকরা ৭০ ভাগ পুরুষ থাকেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। এর অর্থ দাঁড়ায় দিল্লিদের নারীদের বুঝে নিতে হবে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে। বেশির ভাগ নারী বলেছেন, তারা সবচেয়ে বেশি খারাপ আচরণের শিকার জন যাত্রী বোঝাই পরিবহনে, বাসস্ট্যান্ডে এবং রেল স্টেশনে। ফলে তাদের অনেককে সঙ্গী বা গ্রুপে চলাফেরা করতে হয়। একটি টেলিভিশন কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ যশপ্রীত খুরানা সমপ্রতি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তার অভিযোগ, বস তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। তিনি বলেছেন, অনেক সময় আমি তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন আমি বিষয়টি সিনিয়র এক বসকে জানাই। ওদিকে যশপ্রীতের বস যখন একটি প্রমোশন পান, তখন যশপ্রীতের ইনক্রিমেন্ট যায় বন্ধ হয়ে। অনেক নারী আছেন যারা অফিসে তার বসদের এমন আচরণের শিকার। কিন্তু তারা অর্থনৈতিক কারণে অথবা মান মর্যাদার ভয়ে এর প্রতিবাদ না করে নীরবে সহ্য করে যাচ্ছেন সব। যশপ্রীত বলেছেন, তার অফিসে একমাত্র তিনিই যৌন হয়রানির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যশপ্রীত আরেক দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন স্কুটারে করে বাসায় ফেরার পথে বাইকে চড়া এক ব্যক্তি আমাকে দেখে অশ্লীল মন্তব্য করে। আমি তাকে সজোরে একটি থাপ্পড় বসিয়ে দিই। উপস্থিত জনতা তা দেখলো। কিন্তু কেউই জিজ্ঞেস করলো না কি হয়েছে। সমপ্রতি আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। ২৪ বছর বয়সী এক যুবতীকে উত্ত্যক্ত করছিল মদ্যপ একদল লোক। তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তারই ৫৫ বছর বয়সী পিতা। এর ফলে ওইসব মদ্যপ তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। একজন মানুষও তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। মিজোরাম থেকে ৩০ বছর বয়সী কল সেন্টারে কাজ করা এক যুবতীকে অপহরণ করেছিল ৫ জন। এরপরে তাকে একটি পিকআপ ট্রাকে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে যাওয়া হয়। রাজধানী নয়া দিল্লির গ্রাফ দেখায় যে, এই বছর সেখানে ধর্ষণের সংখ্যা নির্দেশক গ্রাফ ক্রমশ উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি.কে গুপ্তা বলেছেন, নারীদের অধিকার রক্ষায় ও তাদের প্রশিক্ষণ দিতে নারী বিষয়ক থানা স্থাপন করা হয়েছে। প্রশিক্ষিত ওই সব নারী পুলিশকে কৌশলগত অবস্থানে মোতায়েন করা হয়। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে নগরীর নারীরা। আলিয়া নামে এক ছাত্রী বলেছেন, পুলিশ অপরাধ দমন করতে পারে যদি তারা ইচ্ছা করে। তাদের এমন সদিচ্ছা আছে, যার প্রমাণ মিলেছে গত বছরের কমনওয়েলথ গেমসের সময়। ওই সময়ে শহরে এমন কোন ঘটনার খবর মেলেনি। ইন্দ্রাপ্রাসথা কলেজের লেকচারার ড. নীরাজ মালিক বলেন, এখন আমার যে বয়স হয়েছে তাই-ই আমাকে রক্ষা করে। কিন্তু সারা জীবন পুরুষরা আমাকে বিরক্ত করেছে।
———————————————-
————————————————
ধর্ষণের শহর দিল্লি!
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি এখন ধর্ষণের শহর। দেশটির ৩৫টি মেগাসিটির মধ্যে গত বছর সবচেয়ে বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এই দিল্লিতে। এরপরই রয়েছে বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের অবস্থান। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপরাধবিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর দিল্লিতে ৪১৪ জন এবং মুম্বাইয়ে ১৯৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়। প্রতিবেদন মতে, এসব মেগাসিটিতে ২০১০ সালে অপরাধ বেড়েছে সাত দশমিক তিন শতাংশ। মেগাসিটিগুলোতে গত বছর ভারতের দণ্ডবিধির আওতায় তিন লাখ ৬৮ হাজার ৮৮৩টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ২০০৯ সালে এ সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৯।
প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান মতে, ২০১০ সালে পুরো ভারতে অপরাধ সংঘটিত হয় ২২ লাখ ২৪ হাজার ৮৩১টি। ২০০৯ সালে তা ছিল ২১ লাখ ২১ হাজার ৩৪৫টি। অর্থাত্, গত বছর অপরাধ বেড়েছে চার দশমিক নয় শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছর দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরুর মতো বড় শহরের তুলনায় কচি, ভূপাল, ইন্দোরের মতো ছোট শহরগুলোতে অপরাধের হার ছিল বেশি। প্রতিবেদন মতে, গত বছর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সাইবার অপরাধ। ২০০৯ সালের তুলনায় এটি ৮৯ দশমিক নয় শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে গত বছর মোট অপরাধের ৩৩ দশমিক নয় শতাংশ ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। এর পরই ১৩ দশমিক নয় শতাংশ ঘটেছে অন্ধ্র প্রদেশে এবং ১১ দশমিক চার শতাংশ তামিলনাড়ু রাজ্যে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
to know more about this please try this link. @ https://emani85.wordpress.com/2011/10/28/ধর্ষণের-শহর-দিল্লি/
http://www.manikganjnews.com/?p=1419